হঠাৎ করে ঘুমানোর সময় নাক ডাকতে শুরু করেছেন? যদি ভাবেন নাক ডাকা তো খুবই একটা সাধারণ জিনিস তাহলে আপনি কিন্তু ভুল করছেন। নাক ডাকা কিন্তু গভীর ও জটিল রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। বা যদি আপনি আগে থেকেই কোনো রোগের শিকার হন তা আরো জটিল হয়ে উঠতে পারে।

নাক ডাকার জন্য এ গুলো হতে পারেঃ


০১ > হাইপারটেনশনঃ আপনার হার্ট-সংক্রান্ত কোন রোগ হয়ে থাকে তাহলে রাতে নাক ডাকাটা কিন্তু খুব স্বাভাবিক। নাক ডাকার সময় হঠাৎ করে নিঃশ্বাস থেমে যায়।ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এই উচ্চ রক্তচাপ কিন্তু পরের দিনেও থেকে যায়।গবেষণা করে দেখা গেছে ৫০ বছরের কম ব্যক্তি যারা রাতে নাক ডাকে তারা বেশির ভাগই হাইপারটেনশনের শিকার।

০২>ডায়বেটিসঃ নাক ডাকা থেকেই টাইপ টু ডায়াবেটিস হতে পারে। মহিলাদের এটা বেশি হয়।শরীরে যখন অক্সিজেন কমে যায় তখন স্ট্রেস বেড়ে যায়। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় যা থেকে ভবিষ্যতে টাইপ টু ডায়াবেটিস হতে পারে।

০৩>মোটা হওয়াঃ নাক ডাকার জন্য আপনি মোটা হয়ে যাবেন না।কিন্তু আপনি যদি মোটা হন তাহলে আপনার নাক ডাকতে পারে।যেমন-ধরুন ওবেসিটির কারনে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায় অনেকটা।

০৪>স্ট্রোকঃ গবেষনা বলছে নাক ডাকার জন্য স্ট্রোক হতে পারে। গবেষণার ফলে আরও দেখা গিছে Sleep Apnoea এর কারনে স্ট্রোক হতে পারে।আর নাক ডাকাই তারই একটা Symptom.

০৫>ডিপ্রেশনঃ রাতে ভালো ভলো ঘুম না হলে মেন্টাল হেলথ্ এর ওপর প্রভাব ফেলে।তাই Sleep Apnoea বা নাক ডাকার কারনে যদি ডিপ্রেশন হয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।সমীক্ষায় দেখা গিছে যারা নাক ডাকেন(৩০% থেকে ৫০%)তাদের আগেই ডিপ্রেশন ধরা পড়েছে।

০৬>লিবিডো কমে যাওয়াঃ নাক ডাকার ফলে শুধু যে আপনার পার্টনারের ঘুমের দফা রফা হচ্ছে তা নয়।একই সঙ্গে আপনার দাম্পত্য জীবনেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ৮২৭ জন ব্যক্তির ওপর সমীক্ষা করে দেখা গিছে তাদের মধ্যে যারা সব থেকে জোরে নাক ডাকেন তারা সব থেকে কম নিজের পার্টনারদের সন্তষ্ট করতে পেরেছে।

০৭>মাথাব্যথাঃ যারা রাতে নিয়মিত নাক ডাকেন তাদের লক্ষ্য করা গেছে সকালে হালকা মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙ্গছে তাদের। এ ছাড়াও দেখা গেছে এইসব ব্যক্তিদের বেশি মাইগ্রেন, ইনসমনিয়া এবং সাইকোলজিক্যাল ডিসওর্ডারের হয়ে থাকে।

০৮>এঊজই বা (Gastroesophageal Reflux Disease. GRD)ঃ যারা নাক ডাকেন দেখা গেছে তাদের অম্বল বুক জ্বালা হওয়ার আশংকা অনেকটা বেড়ে গেছে যারা নাক ডাকেন না তাদের তুলনায়।

০৯>ক্যান্সারঃ শরীরে অক্সিজেন কমে গেলে ক্যান্সার হওয়ার আশংকাটা অনেক বেড়ে যায়। মনে করা হয় কম অক্সিজেনের ফলে অক্সিজেনের মাত্রা পূরণ করার জন্য আরো বেশি ব্লাড ভেসেল বাড়ে।টিউমার হওয়ার অনেক কারনের মধ্যে এটাও কিন্ত একটা কারন।অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন সৃষ্টি হতে পারে।

শাহীন শাহরিয়ার,
জেনারেল প্রাকটিশনার।